(প্রতিটি চারার গড় উচ্চতা ১-২ ফিট, দেশী জাতের, কলম থেকে উৎপাদিত)
লাল গোলাপ ফুল গাছের চারা, গোলাপকে ফুলের রানী বলা হয়। বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে এখন বহুজমিতে গোলাপের চাষ হচ্ছে। একইসাথে দিন দিন গোলাপের চাষ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং গোলাপ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
জাত সমূহঃ
পৃথিবীজুড়ে গোলাপের অসংখ্য জাত রয়েছে। জাতগুলোর কোনোটির গাছ বড়, কোনোটি ঝোপালো, কোনোটি লতানো। জাত বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী গোলাপ সাদা, লাল, হলুদ, কমলা, গোলাপি এবং মিশ্রিত রঙের হয়ে থাকে। এ ছাড়াও রানি এলিজাবেথ (গোলাপি), ব্ল্যাক প্রিন্স (কালো), ইরানি (গোলাপি), মিরিন্ডা (লাল), দুই রঙা ফুল আইক্যাচার চাষ করা হয়।
আবার ব্যবহার অনুযায়ী গোলাপকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। কাঁটা ফুল বা হাইব্রিড-টি গোলাপ, ঝুরো গোলাপ, বাগিচা গোলাপ এবং সুগন্ধি গোলাপ। শেষ প্রজাতির গোলাপ থেকে আতর ও গুলকন্দ তৈরি হয়।
লাল গোলাপঃ
বাণিজ্যিকভাবে আমাদের বাংলাদেশে লাল জাতের গোলাপ চাষ বেশী লাভজনক। লাল গোলাপের কদর সবখানেই। পছন্দ ও ব্যবহারের দিক থেকে চিন্তা করলে লাল গোলাপের গ্রহণযোগ্যতা সর্বত্রই।
বংশবিস্তারঃ
গোলাপের বংশ বিস্তারের জন্য অবস্থাভেদে শাখা কলম, দাবা কলম, গুটি কলম ও চোখ কলম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। নতুন জাত উদ্ভাবনের জন্য বীজ উৎপাদন করে তা থেকে চারা উৎপাদন করা হয়।
জমি নির্বাচনঃ
গোলাপ চাষের জন্য উর্বর দোআঁশ মাটির জমি নির্বাচন করা উত্তম। ছায়াবিহীন উঁচু জায়গা যেখানে জলাবদ্ধতা হয় না, এরূপ জমিতে গোলাপ ভালো জন্মে।
জমি তৈরিঃ
নির্বাচিত জমি ৪-৫ টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুর ঝুরা ও সমতল করতে হবে। এরপর মাটি কুপিয়ে ৫ সেমি উঁচু করে ৩ মি. x ১মি. আকারের বেড বা কেয়ারি তৈরি করতে হবে। এভাবে কেয়ারী তৈরির পর নির্দিষ্ট দূরত্বে ৬০ সেমি. x ৬০ সেমি. আকারের এবং ৪৫ সেমি. গভীর গর্ত খনন করতে হবে। গর্তের উপরের মাটি ও নিচের মাটি আলাদা করে রাখতে হবে। চারা রোপণের ১৫ দিন আগে গর্ত করে খোলা রাখতে হবে। এ সময়ে গর্তের জীবাণু ও পোকামাকড় মারা যায়।
সার প্রয়োগঃ
প্রতি গর্তের উপরের মাটির সাথে সার মিশিয়ে গর্তে ফেলতে হবে। এরপর নিচের মাটির সাথে ৫ কেজি পচা গোবর, ৫ কেজি পাতা পচা সার ও ৫০০ গ্রাম ছাই ভালোভাবে মিশিয়ে গর্তের উপরের স্তরে দিতে হবে। এভাবে গর্ত সম্পূর্ণ ভরাট করার পর ১৫-২০ দিন ফেলে রাখলে সারগুলো পচবে ও গাছ লাগানোর উপযুক্ত হবে। বর্ষাকালে যাতে গাছের গোড়ায় বৃষ্টির পানি জমে না থাকে, সে জন্য নালা তৈরি করতে হবে।
চারা বা কলম রোপণঃ
লাল গোলাপ ফুল গাছের চারা, আশ্বিন মাস চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। তবে পৌষ মাস পর্যন্ত চারা লাগালে বেডের গর্তের মাঝখানে ক্ষুদ্রাকৃতির গর্ত খুঁড়ে চারা লাগাতে হয়। প্রথমে পলিথিন ব্যাগ বা মাটির টব থেকে চারা বের করে দুর্বল শাখা, রোগাক্রান্ত শিকড় ইত্যাদি কেটে ফেলতে হয়। চারা লাগিয়ে গোড়ায় শক্তভাবে মাটি চেপে দিতে হবে। চারা রোপণের পর চারাটি একটি খুঁটি পুতে খুঁটির সাথে বেঁধে দিতে হবে। চারা লাগিয়ে গোড়ায় পানি দেওয়া উচিত। ২-৩ দিন ছায়ার ব্যবস্থা করলে ভালো হয়।
পরিচর্যা-
আগাছা দমনঃ
গোলাপের কেয়ারিতে অনেক আগাছা হয়। আগাছা তুলে ফেলতে হবে।
পানি সেচঃ
মাটির আর্দ্রতা যাচাই করে গাছের গোড়ায় এমনভাবে সেচ দিতে হবে যেন মাটিতে রসের ঘাটতি না হয়।
পানি নিকাশঃ
গোলাপের কেয়ারীতে কোনো সময়ই পানি জমতে দেওয়া উচিত নয়। কারণ গোলাপ গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না।
ফুলের কুঁড়ি ছাঁটাইঃ
অনেক সময় ছাঁটাই করার পর মূলগাছের ডালে অনেক পত্রমুকুল ও ফুলকুঁড়ি জন্মায়।
পোকা মাকড় ব্যবস্থাপনাঃ
গোলাপ গাছে যেসব পোকা দেখা যায় তন্মধ্যে রেড স্কেল ও বিটল প্রধান।
রোগ ব্যবস্থাপনাঃ
গোলাপ গাছে অনেক রোগ হয়। তন্মধ্যে কালো দাগ পড়া রোগ, ডাইব্যাক ও পাউডারি মিলডিউ প্রধান।
কালো দাগ পড়া রোগঃ
এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। রোগাক্রান্ত গাছের পাতায় গোলাকার কালো রঙ্গের দাগ পড়ে।
ডাইব্যাকঃ
ডাল ছাঁটাইয়ের কাটা স্থানে এ রোগ আক্রমণ করে। এ রোগ হলে গাছের ডাল বা কাণ্ড মাথা থেকে
পাউডারি মিলডিউঃ
এটি একটি ছত্রাক জনিত রোগ। শীতকালে কুয়াশার সময় এ রোগের বিস্তার ঘটে।
ফলনঃ
লাল গোলাপ ফুল গাছের চারা, গোলাপের ফলন প্রধানত আবহাওয়া ও জাতের উপর নির্ভরশীল। পরিবেশে লম্বা কান্ডযুক্ত জাত প্রতি বছর
তথ্য ও সূত্রঃ অনলাইন সংগ্রহ।