সৌন্দর্য অনেকের মন কেড়ে নেয়। এর যত্ন এবং চাষ সহজ হলেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। মর্নিং গ্লোরি ফুলের রঙিন পাপড়িগুলি সকালে খুলে যায় এবং বিকালের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। এই ফুলের চাষ আপনার বাগানকে আরও সুন্দর করে তুলতে পারে। কিন্তু, মর্নিং গ্লোরি ফুলের যত্নের কিছু বিশেষ দিক আছে যা জানতে হবে। সঠিক মাটি, পর্যাপ্ত সূর্যের আলো এবং নিয়মিত জল দেওয়া এই ফুলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই গাইডে আমরা মর্নিং গ্লোরি ফুলের সৌন্দর্য, যত্ন এবং চাষের সব দিক নিয়ে আলোচনা করব। আপনার বাগানে এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এই গাইডটি অনুসরণ করুন।
মর্নিং গ্লোরি ফুলের পরিচিতি
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং মোহনীয়তার প্রতীক। এই ফুলের রঙ এবং আকৃতি অনেকের মন কাড়ে। মর্নিং গ্লোরি ফুলের সৌন্দর্য এবং যত্ন নিয়ে জানার জন্য এই গাইডটি অত্যন্ত সহায়ক হবে।
ফুলের বৈশিষ্ট্য
প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর উজ্জ্বল রঙ এবং লতা আকৃতি। এই ফুলগুলো সাধারণত নীল, গোলাপি এবং বেগুনি রঙের হয়। লতাগুলি দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং সহজেই যে কোনো জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।
- রঙ: নীল, গোলাপি, বেগুনি
- আকৃতি: লতা আকৃতির
- উদ্ভিদের উচ্চতা: ৬-১০ ফুট
প্রজাতির ভিন্নতা
মর্নিং গ্লোরি ফুলের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। প্রতিটি প্রজাতির আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য এবং সৌন্দর্য।
প্রজাতির নাম | বৈশিষ্ট্য |
---|---|
ইপোমিয়া পুরপুরিয়া | নীল ও বেগুনি রঙের ফুল, সহজে বৃদ্ধি পায় |
ইপোমিয়া নীল | গোলাপি ও সাদা রঙের ফুল, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে |
ইপোমিয়া হেড্রাসিয়া | বেগুনি ও সাদা রঙের ছোট ফুল, কম উচ্চতা |
প্রতিটি প্রজাতির আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকায় এগুলো বিভিন্ন পরিবেশে চাষ করা যায়।
মর্নিং গ্লোরি ফুলের সৌন্দর্য
সৌন্দর্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। এই ফুলগুলি তাদের উজ্জ্বল রঙ এবং আকর্ষণীয় আকৃতির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। প্রতিটি সকালে তারা সূর্যের আলোতে প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে, যা দেখতে সত্যিই চমৎকার।
বর্ণ ও আকার
বর্ণ বিভিন্ন রকমের হয়। নীল, গোলাপী, বেগুনি, সাদা এবং লাল রঙের ফুল দেখা যায়। প্রতিটি ফুলের আকার সাধারণত ৩ থেকে ৫ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। ফুলের পাপড়িগুলি সাধারণত ঢেউখেলানো হয়, যা আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
অন্য ফুলের সাথে তুলনা
মর্নিং গ্লোরি ফুলের সৌন্দর্য অন্য অনেক ফুলের থেকে আলাদা। অন্যান্য ফুলের তুলনায় এটি দ্রুত প্রস্ফুটিত হয়। এর উজ্জ্বল রঙ এবং আকর্ষণীয় আকৃতি একে আলাদা করে তোলে। এছাড়া, মর্নিং গ্লোরি ফুলের পাপড়ির প্রান্তের ঢেউখেলানো ধরন অন্য ফুলের সাথে তুলনা করলে একে আরও অনন্য করে তোলে।
মর্নিং গ্লোরি ফুলের উপকারিতা
উপকারিতা সম্পর্কে অনেক কিছু বলা যেতে পারে। এই ফুল শুধু দেখতে সুন্দর নয়, এর অনেক স্বাস্থ্যকর এবং পরিবেশগত উপকারিতাও রয়েছে। নিচে এই ফুলের কিছু প্রধান উপকারিতা আলোচনা করা হল।
পরিবেশগত সুবিধা
পরিবেশের জন্য খুবই উপকারী। এর ফলে পরিবেশে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই ফুলের গাছ মাটি স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। ফলে মাটির ক্ষয় রোধ হয়। মর্নিং গ্লোরি ফুল অনেক পোকামাকড় ও পাখির জন্য খাদ্যের উৎস। এটি বাগানের জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি করে।
মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাব
সৌন্দর্য মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এর সুন্দর রঙ ও গন্ধ মনকে প্রশান্তি দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ফুলের যত্ন নেওয়া মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
মর্নিং গ্লোরি ফুলের যত্ন
যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ফুলগুলো তাদের উজ্জ্বল রঙ এবং আকর্ষণীয় পাপড়ির জন্য জনপ্রিয়। সঠিক যত্ন নিলে এই ফুলগুলো সুন্দরভাবে ফুটবে এবং বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে। নিচে মর্নিং গ্লোরি ফুলের যত্নের কিছু মূল বিষয় আলোচনা করা হলো।
জলসেচের নিয়ম
মর্নিং গ্লোরি ফুলের জন্য নিয়মিত জলসেচ প্রয়োজন। গ্রীষ্মকালে বিশেষ করে সকাল বেলা ও সন্ধ্যায় জলসেচ করা উচিত। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে মাটি সবসময় আর্দ্র থাকে কিন্তু জল জমে না।
- সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার জলসেচ করুন।
- মাটি শুকিয়ে গেলে আবার জলসেচ করুন।
- অতিরিক্ত জল দেওয়ার থেকে বাঁচুন।
পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা
মর্নিং গ্লোরি ফুলের সঠিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পুষ্টি সরবরাহ করলে ফুলগুলো সুস্থ ও সুন্দর থাকবে।
পুষ্টি | প্রয়োজনীয়তা |
---|---|
নাইট্রোজেন | পাতার বৃদ্ধি ও সবুজ রঙের জন্য |
ফসফরাস | ফুলের গঠন ও সুস্থতার জন্য |
পটাশিয়াম | মোটামুটি সব ধরণের বৃদ্ধির জন্য |
- মাসে একবার সার প্রয়োগ করুন।
- অতিরিক্ত সার প্রয়োগ থেকে বাঁচুন।
- প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করুন।
মর্নিং গ্লোরি ফুলের চাষ
মর্নিং গ্লোরি ফুলের চাষ করতে গেলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এই ফুলগুলি তাদের উজ্জ্বল রঙ এবং সহজ চাষাবাদের জন্য পরিচিত। সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি সহজেই সুন্দর মর্নিং গ্লোরি ফুলের গাছ পেতে পারেন।
মাটি নির্বাচন
মর্নিং গ্লোরি ফুলের জন্য উর্বর এবং সু-নিষ্কাশিত মাটি প্রয়োজন। মাটির pH স্তর ৬ থেকে ৭ এর মধ্যে থাকা উচিত। মাটিতে অর্গানিক পদার্থ মিশিয়ে নিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। মাটি যাতে জলাবদ্ধ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
বীজ বপনের পদ্ধতি
মর্নিং গ্লোরি ফুলের বীজ মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে বপন করা উচিত। বীজ বপনের আগে বীজগুলি গরম পানিতে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এতে বীজের অঙ্কুরোদগম সহজ হবে।
- বীজগুলি ১/৪ ইঞ্চি গভীরে মাটির মধ্যে পুঁতে দিন।
- বীজগুলি ২-৩ ইঞ্চি দূরত্বে রাখুন।
- বীজ বপনের পর মাটি হালকা জল দিয়ে ভিজিয়ে দিন।
- বীজগুলি ৮-১০ দিনের মধ্যে অঙ্কুরিত হবে।
বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার পর গাছগুলি সরাসরি সূর্যালোক পেতে হবে। গাছগুলি পূর্ণবিকাশে পৌঁছতে ৬-৮ সপ্তাহ সময় লাগে। মর্নিং গ্লোরি ফুলের গাছগুলি সমর্থন হিসেবে কাঠি বা তারের ব্যবস্থাও করতে পারেন।
মর্নিং গ্লোরি ফুলের বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত আবহাওয়া
মর্নিং গ্লোরি ফুলের বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত আবহাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ফুলগুলো তাদের সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত এবং সঠিক পরিবেশে তাদের বৃদ্ধি দ্রুত হয়। সঠিক তাপমাত্রা এবং আলো এই ফুলগুলোর স্বাস্থ্যবান ও সুন্দর বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।
তাপমাত্রা
মর্নিং গ্লোরি ফুলের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা হলো ১৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রায় ফুলগুলো সবচেয়ে ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়। গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা তাদের জন্য আদর্শ। যখন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যায়, ফুলগুলোর বৃদ্ধি ধীরে হয়। অতিরিক্ত শীতল আবহাওয়া তাদের ক্ষতি করে। তাই শীতকালে সুরক্ষা খুবই প্রয়োজন।
আলো ও ছায়া
মর্নিং গ্লোরি ফুলের বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত আলো অত্যন্ত জরুরি। দিনে অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা সরাসরি সূর্যের আলো তাদের জন্য আদর্শ। যথেষ্ট আলো না পেলে ফুলগুলো ঠিকমতো ফোটে না। তাই আলোবিহীন স্থানে তাদের রোপণ করা উচিত নয়। অত্যধিক ছায়া তাদের বৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। ছায়াযুক্ত স্থানে ফুলগুলোর বৃদ্ধি ধীরে হয় এবং ফুলের সংখ্যা কমে যায়। তবে, অতিরিক্ত গরমেও কিছুটা ছায়া তাদের জন্য উপকারী হতে পারে। বিশেষ করে দুপুরের সময় কিছুটা ছায়া তাদের সুরক্ষা দেয়।
মর্নিং গ্লোরি ফুলের রোগ ও প্রতিকার
মর্নিং গ্লোরি ফুলের সঠিক যত্ন না নিলে বিভিন্ন রোগের শিকার হতে পারে। এই রোগগুলি ফুলের সৌন্দর্য নষ্ট করতে পারে এবং চাষের ফলন কমাতে পারে। এই অংশে আমরা মর্নিং গ্লোরি ফুলের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানব।
সাধারণ রোগ
কিছু সাধারণ রোগের মধ্যে রয়েছে:
- পাউডারি মিলডিউ: পাতায় সাদা গুঁড়ো জাতীয় দাগ দেখা দেয়।
- ডাউন মাইলডিউ: পাতায় হলুদ দাগ এবং নিচের দিকে সাদা ফাংগাস দেখা যায়।
- রুট রট: গাছের মূল পচে যায় এবং গাছ মরে যায়।
- এফিডস আক্রমণ: পাতায় ছোট ছোট পোকা দেখা যায়, যা গাছের রস শুষে নেয়।
রোগ প্রতিরোধের উপায়
মুক্ত রাখতে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত:
- পর্যাপ্ত সূর্যালোক: মর্নিং গ্লোরি ফুলের জন্য পর্যাপ্ত সূর্যালোক নিশ্চিত করুন।
- সঠিক পানি সরবরাহ: গাছের প্রয়োজন অনুযায়ী পানি দিন, অতিরিক্ত পানি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- ফাঙ্গিসাইড ব্যবহার: ফাঙ্গিসাইড প্রয়োগ করে পাউডারি এবং ডাউন মাইলডিউ প্রতিরোধ করুন।
- পোকা নিয়ন্ত্রণ: এফিডস আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত পোকা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
রোগ | লক্ষণ | প্রতিকার |
---|---|---|
পাউডারি মিলডিউ | পাতায় সাদা গুঁড়ো দাগ | ফাঙ্গিসাইড প্রয়োগ |
ডাউন মাইলডিউ | পাতায় হলুদ দাগ ও সাদা ফাংগাস | ফাঙ্গিসাইড প্রয়োগ |
রুট রট | মূল পচন | সঠিক পানি সরবরাহ |
এফিডস আক্রমণ | পাতায় ছোট পোকা | পোকা নিয়ন্ত্রণ |
মর্নিং গ্লোরি ফুলের ছাঁটাই
করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ছাঁটাই ফুলের স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য এবং বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। এটি ফুলের সংখ্যা বাড়ায় এবং গাছকে সুস্থ রাখে। এখন আমরা মর্নিং গ্লোরি ফুলের ছাঁটাই সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করব।
ছাঁটাই করার সময়
সঠিক সময় হল বসন্ত ঋতু। এই সময়ে গাছের নতুন কুঁড়ি গজায়। ফলে ছাঁটাই করলে গাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। গাছের ফুল ফোটার পরও ছাঁটাই করা যায়। তবে ফুল ফোটার পরে ছাঁটাই করলে গাছের পরবর্তী ফুল ফোটার সময় কমে যেতে পারে।
ছাঁটাই করার কৌশল
আগে গাছের শুকনো ও মরা অংশগুলি চিহ্নিত করুন। প্রথমে শুকনো ও মরা ডালপালা কেটে ফেলুন। তারপর গাছের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করুন। এক্ষেত্রে কাঁচি বা ছুরি ব্যবহার করুন। ধারালো যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে গাছের ক্ষতি হয় না। গাছের উপরের অংশে বেশি ফুল ফোটানোর জন্য নিচের অংশের ডালপালা ছাঁটাই করুন। গাছের মাঝের অংশের ডালপালা ছাঁটাই করে হালকা করুন। এতে আলো ও বাতাস গাছের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে।
মর্নিং গ্লোরি ফুলের সঙ্গী গাছ
সঙ্গী গাছ হিসেবে খুব ভালোভাবে মানিয়ে যায় বেগুন ও টমেটো গাছ। সঙ্গী গাছগুলো মর্নিং গ্লোরির শিকড়কে সুরক্ষা দেয় এবং মাটির পুষ্টি বাড়ায়।

মর্নিং গ্লোরি ফুলের বাগান পরিকল্পনা
বাগান পরিকল্পনা করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এই ফুলের সৌন্দর্য ও সঠিক যত্নের জন্য সঠিক স্থান নির্বাচন ও ডিজাইন খুবই জরুরি। এখন আমরা জানবো কিভাবে সঠিকভাবে মর্নিং গ্লোরি ফুলের বাগান পরিকল্পনা করতে হয়।
বাগানের স্থান নির্বাচন
জন্য উজ্জ্বল সূর্যের আলো প্রয়োজন। তাই বাগানের এমন জায়গা নির্বাচন করুন যেখানে দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যরশ্মি পড়ে। এই ফুল গাছের জন্য ভালভাবে ড্রেনেজ হওয়া মাটি নির্বাচন করুন। জমাট মাটিতে এই গাছ ভালো বাড়ে না। বাগানের জায়গা নির্বাচনের সময় বাতাস চলাচলের দিকেও খেয়াল রাখুন। বাতাস চলাচল ভালো হলে গাছ সুস্থ থাকে।
ডিজাইন ও বিন্যাস
বাগানের ডিজাইন ও বিন্যাস করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখুন। প্রথমেই বাগানের আকার নির্ধারণ করুন। ছোট বা বড় যেকোন আকারেই এই বাগান করা যেতে পারে। গাছগুলোকে পর্যাপ্ত স্থান দিন যাতে তারা সঠিকভাবে বাড়তে পারে। খুব ঘন করে গাছ লাগাবেন না। মর্নিং গ্লোরি ফুলের জন্য ট্রেলিস বা আরবার ব্যবহার করতে পারেন। এতে গাছগুলো আরো সুন্দরভাবে বাড়বে। বাগানের বিন্যাসে বিভিন্ন রঙের মর্নিং গ্লোরি ফুল ব্যবহার করুন। এতে বাগান আরো মনোমুগ্ধকর দেখাবে।
মর্নিং গ্লোরি ফুলের প্রসারণ
একটি মজাদার এবং সহজ প্রক্রিয়া। এই ফুলের প্রসারণের মাধ্যমে বাগানকে আরও মনোমুগ্ধকর করা যায়। নিচে প্রসারণের জন্য উপযুক্ত পদ্ধতি এবং সময় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
গ্ল্যাডিওলাস ফুল: চাষ, পরিচর্যা এবং সৌন্দর্যের পূর্ণাঙ্গ গাইড
প্রসারণের পদ্ধতি
মর্নিং গ্লোরি ফুলের প্রসারণের প্রধান দুটি পদ্ধতি হলো বীজ এবং কাটা। বীজ থেকে প্রসারণ সহজ এবং কার্যকর। প্রথমে বীজগুলো ঠান্ডা পানিতে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর বীজগুলো মাটিতে বপন করুন। মাটি ভালোভাবে চাষ করা উচিত। কাটা পদ্ধতিতেও প্রসারণ করা যায়। একটি সুস্থ গাছ থেকে ১০-১৫ সেমি লম্বা ডাল কেটে নিন। কাটা অংশের নিচের অংশটি মাটিতে পুঁতে দিন। নিয়মিত জল দিন। ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে শিকড় গজাবে।
প্রসারণের জন্য উপযুক্ত সময়
প্রসারণের জন্য বসন্ত ঋতু সবচেয়ে উপযুক্ত। এই সময় আবহাওয়া উষ্ণ এবং মাটি আর্দ্র থাকে। এছাড়া গ্রীষ্মের শুরুতেও প্রসারণ করা যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত গরমে ফুলের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। শীতকালে প্রসারণ না করাই ভালো। শীতল আবহাওয়ায় বীজের অঙ্কুরোদগম কম হয়।
মর্নিং গ্লোরি ফুলের ব্যবহার
বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচলিত। এই সুন্দর ফুলটি শুধু বাগানের সৌন্দর্য বর্ধনেই নয়, এর রয়েছে ঔষধি গুণাবলীও। নিচে মর্নিং গ্লোরি ফুলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার তুলে ধরা হলো।
সৌন্দর্য বর্ধনে ব্যবহার
বাগানের সৌন্দর্য বাড়াতে মর্নিং গ্লোরি ফুলের জুড়ি নেই। এই ফুলগুলি বিভিন্ন রঙে পাওয়া যায়, যা বাগানকে করে তোলে রঙিন ও আকর্ষণীয়।
- বাড়ির বাগানে
- বারান্দায়
- বাড়ির চারপাশে বেড়া ঘেরা জায়গায়
এছাড়াও, মর্নিং গ্লোরি ফুলের ঝুলন্ত প্রজাতি বারান্দার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
ঔষধি গুণাবলী
মর্নিং গ্লোরি ফুলের অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। প্রচলিত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয়।
রোগ | ফুলের ব্যবহার |
---|---|
নিদ্রাহীনতা | ফুলের নির্যাস দিয়ে তৈরি চা |
ডায়রিয়া | ফুলের পাতার নির্যাস |
জ্বর | ফুলের রস |
এই সব ঔষধি গুণাবলী মর্নিং গ্লোরি ফুলকে করে তোলে আরও মূল্যবান।
অ্যানিমোন ফুল: সৌন্দর্য ও পরিচর্যার সহজ উপায়
Frequently Asked Questions
মর্নিং গ্লোরি ফুল কী?
এক রকম লতানো উদ্ভিদ। এরা খুবই রঙিন ও মনোমুগ্ধকর।
কীভাবে করবেন?
মাটি আর্দ্র রাখুন। পর্যাপ্ত সূর্যালোক দিন। নিয়মিত জল দিন। গাছ ছাঁটুন।
কোথায় রোপণ করবেন?
সর্বোত্তম ফলাফলের জন্য পূর্ণ সূর্যালোক পাওয়া যায় এমন স্থানে রোপণ করুন।
মর্নিং গ্লোরি ফুল কী ধরনের মাটিতে ভালো জন্মায়?
ভাল নিষ্কাশনযুক্ত এবং সমৃদ্ধ মাটিতে ভাল জন্মায়।
কত দ্রুত বাড়ে?
মর্নিং গ্লোরি ফুল দ্রুত বৃদ্ধি পায়। সাধারণত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফুল ফোটে।
Conclusion
মর্নিং গ্লোরি ফুল আপনার বাগানের সৌন্দর্য বাড়াবে। এর যত্ন নেওয়া সহজ। নিয়মিত পানি দিন। পর্যাপ্ত সূর্যালোক প্রয়োজন। সহজেই বৃদ্ধি পায়। বীজ থেকে চাষ করা যায়। মাটি উর্বর হলে ভালো হয়। ফুলের রঙ নীল, গোলাপি, সাদা। খুবই দৃষ্টিনন্দন। আপনার বাগানে নতুন মাত্রা যোগ করবে। মর্নিং গ্লোরি চাষ করে প্রকৃতির কাছাকাছি থাকুন। আনন্দ এবং শান্তি পাবেন। বাগানের শোভা বৃদ্ধি পাবে। নিয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করুন।